নিপুন জানান, দূরত্ব ও রাস্তা খারাপ হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের পরে বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছান তিনি। এ কারণে ভর্তি হতে পারেননি।

দেরিতে পৌঁছানোয় মেধা তালিকার শীর্ষে থেকেও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা নিপুন বিশ্বাসের সুযোগ এখনও রয়েছে। তবে তাকে সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিপুনের বাড়ি নীলফামারী সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে। তবে নিপুন সেখানে পৌঁছান দুপুর ১২টার কিছু পরে।

এ কারণে তার ভর্তি নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। এই ঘটনা ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা নিপুনের দুর্ভাগ্য। নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ কর্তৃপক্ষের নেই।

নিপুন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের শরীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ সেশনে ভর্তির তালিকায় তার নাম ছিল শীর্ষে।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়, সোমবার সকালে ওই বিভাগে ভর্তি কার্যক্রম হবে। সেজন্য তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ভর্তি সম্পন্ন করতে হবে।

ওই তালিকায় নিপুন ছাড়া আছেন আরও দুইজন।

নিপুন জানান, তার স্মার্টফোন নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট চেক করতে পারেননি। তিনি আশা করেছিলেন ভর্তির নোটিশ তার মোবাইল ফোনে এসএমএস করে কিংবা ফোন করে নোটিশের বিষয়ে জানাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিপুন আরও জানান, রোববার মধ্যরাতে পরিচিত একজন ফোন করে তাকে নোটিশের বিষয়টি জানান। এরপর পরিচিতজনদের কাছ থেকে তিনি ২৩ হাজার টাকা ধার করেন। এর মধ্যে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে মাইক্রোবাস ঠিক করেন। সোমবার সকালে সেই গাড়িতে করে তিনি যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

তিনি জানান, দূরত্ব ও রাস্তা খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছাতে তার দেরি হয়ে যায়। ভর্তির সময় ১১টায় শেষ হলেও তিনি পৌঁছান ১২টা ৮ মিনিটে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার দেরি হওয়ায় তালিকায় অপেক্ষায় থাকা একজনকে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন তানভীর ইসলাম জানান, রোববার দুপুরে এক শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করায় ভর্তির তৃতীয় বিজ্ঞপ্তি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। উপাচার্যের নির্দেশ ছিল ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার ৩ বিভাগসহ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির কাজ ছিল। এ কারণে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তির জন্য সময় বাড়িয়ে বেলা ১২টা করা হয়। এর মধ্যেও নিপুন উপস্থিত হতে পারেনি। তবে তালিকায় অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থী সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তাকেই ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও জানান, নিপুনের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আর কিছু করার নেই। নিয়মের মধ্যে থেকেই কর্তৃপক্ষকে অনেক সময় কঠিন সিদ্ধান্তে যেতে হয়। তবে নিপুনকে প্যানেলভুক্ত করা হবে। পরে কোনো সিট ফাঁকা হলে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে তাকে ভর্তি করা যেতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ম্যাসেজ বা কল দেয়ার কথা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি জানান এটা টেকনিক্যাল কমিটির বিষয়।

টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ গালিব বলেন, ‘ম্যাসেজ দেয়া বাধ্যতামূলক নয়। শিক্ষার্থীকে জানানোর জন্যে ওয়েবসাইটে নোটিশ দেয়া হয়, কিন্তু আমরা শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ম্যাসেজ প্রদান করি। অনেক সময় নানা কারণে ম্যাসেজ পৌঁছাতে দেরি হতে পারে। সময় অনুযায়ী না আসতে পারা দূর্ভাগ্যজনক ঘটনা।’

তিনিও জানিয়েছেন, সিট খালি হলে নিয়ন ভর্তি হতে পারবেন বলে আশা করছেন।